আছাদুজ্জামান মিয়ার তথ্য দিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন তিন পুলিশ কর্মকর্তা

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:১২, রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪, ৯ আষাঢ় ১৪৩১

ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে অনলাইনে গেল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগর পুলিশের ‘বৈধ আড়ি পাতা শাখা’ (এলআইসি) থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছিল অনলাইনে প্রকাশিত ওই তথ্য।

এ ঘটনায় এক অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনারসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত উপকমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করার জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্রটি জানায়, আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাপারে ১২ জুন ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পোস্ট দেন জাওয়াদ নির্ঝর নামের এক প্রবাসী। সেই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে তিনি টেলিগ্রামের একটি লিংকও শেয়ার করেন। সেখানে আছাদুজ্জামান মিয়ার ‘ইএসএএফ’ ফরম তুলে দেওয়া হয়। এই ইএসএএফ ফরম হলো ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রাইবার অ্যাপলিকেশন ফরম, যা মূলত মোবাইল গ্রাহকেরা পূরণ করে থাকেন। এই ফরমে একজন ফোন গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, আঙুলের ছাপসহ বিস্তারিত তথ্য থাকে।

ফরমটি প্রকাশের পর পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়। গাজীপুরের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমদ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। ফরমটিতে থাকা কিউআর কোড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগর পুলিশের বৈধ আড়ি পাতা শাখার একজন এএসআই ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার থেকে এটি ডাউনলোড করেছেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার পদের এক কর্মকর্তা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আছাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনের তথ্য চেয়ে বৈধ আড়ি পাতা শাখার এক এসআইকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেন। সেই বার্তার ভিত্তিতে তিনি অন্য একজন এএসআইকে সেটা ডাউনলোড করতে বলেন। পরে সেটা কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়। তদন্তে দেখা যায় অনলাইনে প্রকাশিত ফরমটি হুবহু সেই ফরম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, চিঠিতে একজন অতিরিক্ত উপকমিশনারসহ তিন পুলিশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারাও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Share This Article