ভারতকে করিডোর: লাভ-ক্ষতির অংক ও অপপ্রচার!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:২৯, মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪, ১১ আষাঢ় ১৪৩১

আধুনিক বিশ্বে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সর্বপ্রকার যোগাযোগকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। ট্রানজিট বা করিডোর এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একটি সাধারণ বিষয় হলেও বাংলাদেশে সাধারণ্যে খুব বেশি ধারণা নেই।

ভারতের উত্তর-পূর্বে আসাম রাজ্যের একটি শহর দলগাঁও। পশ্চিম ভারতের সঙ্গে শহরটির যোগাযোগ বেশ দুরূহ। যেতে হয় শিলিগুড়ি করিডোর ঘুরে। তবে বাংলাদেশের ভূখণ্ড তথা করিডোর সুবিধা পেলে দূরত্ব কমে আসবে বহুগুণ। সেই চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছে ভারত। অবশেষে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে স্বাক্ষরিত হয়েছে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক। এরপরই করিডোর বা ট্রানজিট নিয়ে নানান নেতিবাচক তথ্য ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

‘বাংলার বুক চিরে ট্রেন চললে ভারতই লাভবান হবে। বাংলাদেশের নতজানু সরকারের কারণে এ সুযোগ নিচ্ছে দেশটি।’ ‘ভারতের একতরফা লাভ হলেও ক্ষতি হবে বাংলাদেশের।’  ‘ভারতের কাছে বাংলাদেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে সরকার।’ ‘নেপাল-ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টাও মাটি হয়ে গেলো।’ এমন সব শিরোনামে ভিডিও আর হাস্যরস-কৌতুক বানিয়ে ফেসবুক-ইউটিউবে ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিরোধী ঘরানার অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা।

‘নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষণ ছাড়া রেল যোগাযোগ হবে। এখানে থাকতে পারে অস্ত্র-বোমা। ফলে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হতে পারে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা; যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এমনকি আগেও ট্রানজিট দিয়ে কোনো শুল্ক পায়নি বাংলাদেশ। এবারও পাবে না। শুধুমাত্র ভারতকে খুশি করতেই এ সুবিধা দিচ্ছে সরকার।’ এসব কথাও ছড়াচ্ছেন কেউ কেউ। অথচ ট্রানজিট চালু হলে বাংলাদেশও যে বহু সুবিধা ভোগ করতে পারবে সে সম্পর্কে কোনো তথ্যভিত্তিক ডাটা জানেন না অধিকাংশ মানুষ। ফলে অপপ্রচারের একতরফা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে জনমনে।

তথ্যমতে, আধুনিক বিশ্বে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সর্বপ্রকার যোগাযোগকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। ট্রানজিট বা করিডোর এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একটি সাধারণ বিষয় হলেও বাংলাদেশে সাধারণ্যে খুব বেশি ধারণা নেই। এজন্য রাজনৈতিক অপপ্রচারের কারণে শব্দ দুটিকে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়, যা হাস্যকরও বটে।

সাধারণত তিন বা এর চেয়ে বেশি দেশের মধ্যে আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগাযোগকে ট্রানজিট বলা হয়। আন্তর্জাতিক আইনে এক্ষেত্রে কোনো শুল্কের বিধান নেই। তবে অবকাঠামো ব্যবহার করলে বিনিময়ে মাশুল ধার্য করা যায়। অন্যদিকে করিডোর হলো শুধুমাত্র দুটি দেশের মধ্যে যোগাযোগ; যার যাবতীয় মাশুল ধরার বিধান রয়েছে।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুটি বিষয়েই আলোচনার পাশাপাশি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি। সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বিবেচনার পরই দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা একমত হলে চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে প্রথম ধাপের আলোচনায় অধিক মুনাফাসহ দেশের যাবতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের সুযোগ  বাংলাদেশের হাতেই রয়ে গেছে। তাই চুক্তি হয়েছে এমন সমালোচনার সুযোগ নেই। মূলত দুই পক্ষের দেন-দরবারের পরই বিষয়টি বোঝা যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-বাংলাদেশের ট্রানজিট নতুন নয়। আগে থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। তবে রেল ট্রানজিট চালু হলে লাভ হবে দুই দেশেরই। কেননা এই সমঝোতায় করিডোর ছাড়াও নেপাল-ভুটানকে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ফলে ভারতীয় পথ দিয়ে সহজেই এসব দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে বাংলাদেশ। এতে দিনশেষে আমাদের অর্থনীতিও যথেষ্ট চাঙা হওয়ার সুযোগ রয়েছে। অতএব ‘ট্রেন চললে লাভের সিংহভাগই ভারতের’ ধারণাটি একেবারে ভুল। কারণ কোন পদ্ধতিতে ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট হবে সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাই এ নিয়ে ছড়ানো বিভ্রান্তিতে জনসাধারণকে কান না দেয়ার আহ্বান জানান তারা।

Share This Article


দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকার মানুষ আমি না: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী

আবারও মেয়াদ বাড়লো আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনের

গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না, বৃদ্ধি পাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আম গেল ভারতে

মালয়েশিয়ায় যেতে না পারাদের টাকা ফেরতের নির্দেশ

মিথ্যাচার ও অপপ্রচার বিএনপির একমাত্র রাজনৈতিক হাতিয়ার: ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশ-স্পেনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর : অগ্রাধিকার পাবে যেসব বিষয়

কোটা ও সর্বজনীন পেনশনের আন্দোলনে ঢুকছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ ফি পুনর্বিবেচনা করা দরকার : পরিবেশমন্ত্রী

যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৩৪ প্রার্থী