মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আধুনিকায়নে কাজ করবে জাইকা ও বিএফডিসি

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩৫, শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

 জাইকা ও বিএফডিসি কক্সবাজার জেলায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিএফডিসি কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা-সংশ্লিষ্ট দক্ষতার মানোন্নয়নে একসাথে কাজ করবে ।

কক্সবাজার জেলায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্প্রতি ২ হাজার ২৯৪ মিলিয়ন জাপানি ইয়েনের (প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা) গ্র্যান্ট চুক্তি করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়। 

এই প্রকল্পের অধীনে জাইকা ও বিএফডিসি কেন্দ্রের মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিএফডিসি কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা-সংশ্লিষ্ট দক্ষতার মানোন্নয়নে একসাথে কাজ করবে।

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেন্টিভ ইচিগুচি তোমাহিদে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী।

এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি; বিএফডিসি’র চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর এবং জাইকা, ইআরডি, বিএফডিসি ও জাপানের দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, টেক্সটাইলের পরে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হচ্ছে মৎস্য খাত। এ খাতের সাথে সম্পৃক্ত ১১.৮ শতাংশ জনসংখ্যা। এবং মৎস্যজীবীদের মধ্যে ৪০ শতাংশের বাস কক্সবাজারে। এ মৎস্যজীবীরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও এজিং ফ্যাসিলিটির কারণে কার্যকরীভাবে মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হন, যা এ অঞ্চলে ৩২ শতাংশের বেশি উচ্চ দারিদ্র্য হারের অন্যতম কারণ। বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক (এফডিএমএন) এবং কোভিড-১৯ এর আবির্ভাবের কারণে জীবিকার মানোন্নয়ন এবং দারিদ্র্য হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। উন্নয়ন অংশীদার ও এনজিওগুলো এফডিএমএন জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করলেও স্থানীয় মানুষ সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। কক্সবাজারের মৎস্য অবতরণের ৮৫ শতাংশের বেশি কার্যক্রম পরিচালিত হয় সদর উপজেলার বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। এর ওপর, ২০১২ সালের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির কারণে খামারের কিছু অংশ, জেটি এবং অবতরণের অন্যান্য সুবিধাগুলো বেহাল অবস্থায় পড়েছে, যা আর্থিক ও প্রযুক্তিগত উভয় ক্ষেত্রেই এ অবকাঠামোকে আবার ব্যবহারযোগ্য করাকে কঠিন করে তুলেছে। পাশাপাশি, অপর্যাপ্ত অবতরণ প্রক্রিয়া ও অনুন্নত ব্যবস্থাপনা জেলেদের উপার্জনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে; মাছের মান নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং দামও কমে গেছে।

এ প্রেক্ষিতে, এ প্রকল্পের লক্ষ্য কক্সবাজার জেলার বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের অবতরণ ব্যবস্থাপনা কার্যকর করে তোলা, মাছ ব্যবস্থাপনা ও মাছ ধরার ক্ষেত্রে অবতরণ অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের উন্নয়ন; যা সার্বিকভাবে জেলেদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে এবং ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবস্থার মাছ ধরা পরবর্তী অবস্থায় মানোন্নয়ন ঘটাবে। 

জাইকা ইতোমধ্যে কক্সবাজারে বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র উন্নয়নের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি জরিপ করেছে। সমীক্ষার ফল অনুযায়ী মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের উন্নয়ন জেলেদের জীবিকা ও মাছ ধরার ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 

প্রকল্পটি এসডিজি ১ (দারিদ্র্য বিলোপ), এসডিজি ২ (ক্ষুধা মুক্তি), এসডিজি ৩ (সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ), এসডিজি ১৩ (জলবায়ু কার্যক্রম) এবং এসডিজি ১৪ (জলজ জীবন) অর্জনে অবদান রাখবে।

Share This Article