মিথ্যের জালে ইউনূসের ভুলে যাওয়া অসৎ অধ্যায়!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৫৪, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪, ৭ চৈত্র ১৪৩০

অজস্র গালগল্প ফেরি করে ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল পেয়েছিলেন অধ্যাপক ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক, যদিও পুরস্কারটি দেয়া হয়েছিল মানবিক কাজ বা Field: Humanitarian work হিসেবে; যা স্পষ্টভাবে বলেছিল নোবেল কমিটি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঝুলিতে জমেছে দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার। রয়েছে নাম-যশ-খ্যাতিও। অর্থও কামিয়েছেন বেশ। কিন্তু কীভাবে এলো এত অর্জন? কোন গুণেই বা পেলেন সবকিছু; এমন শত প্রশ্ন এখনও উঁকি দিচ্ছে অনেকের মনে। তবে এসবের জবাব পেতে হলে শুরুতেই ঘাঁটতে হবে তার গ্রামীণ ব্যাংকের যাত্রার ইতিহাস।

গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়েবসাইট বলছে, ব্যক্তিগত ঋণের ১২০০ টাকা দিয়ে ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করেন ইউনূস। এরপরই ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় টাঙ্গাইলে দ্বিতীয় শাখা খোলেন তিনি। অথচ আসল সত্য হলো একেবারেই ভিন্ন। মূলত ১৯৭৮ বা ৭৯ সালের দিকে তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী জামালউদ্দিন আহমেদের সহায়তায় জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন এই অধ্যাপক। তার কথার জালে সেই সময় সন্তুষ্ট হন জেনারেল জিয়া।

আর এতেই ইউনূসের প্রতিষ্ঠানটি পেয়ে যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিন কোটি টাকা; যা পরবর্তীতে বাড়িয়ে করা হয় ৩০ কোটি। এমনকি নিয়ম ভঙ্গ করে অফিসও দেয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে। কিন্তু সেই টাকা ফেরত দেয়নি গ্রামীণ ব্যাংক। এজন্য ব্যাংকটির শতভাগ মালিকানা চলে যায় সরকারের অধীনে। তবে এসব কথা কখনোই শোনা যায়নি ড. ইউনূসের মুখে। শুধুমাত্র সেই সুফিয়ার গল্পই বলে বেড়ান তিনি, যদিও দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে সেই মিথ্যা কাহিনির প্রকৃত চিত্রও।

এমন অজস্র গালগল্প ফেরি করে ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল পেয়েছিলেন অধ্যাপক ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক, যদিও পুরস্কারটি দেয়া হয়েছিল মানবিক কাজ বা Field: Humanitarian work হিসেবে; যা স্পষ্টভাবে বলেছিল নোবেল কমিটি। কিন্তু এ নিয়েও ইউনূসের ধাপ্পাবাজি! সত্য আড়াল রেখেই নোবেল পাওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে জোর গলায় বলছেন গ্রামীণ দারিদ্র্যতা বিমোচনের কথা। 

নোবেল পুরস্কার কিংবা গ্রামীণ ব্যাংকই নয়, তার বেশিরভাগ কর্মকাণ্ডের পেছনেই লুকায়িত রয়েছে অসৎ উদ্দেশ্য। যেমন গ্রামীণ টেলিকম বা গ্রামীণফোন নিয়ে তার কিছু ধূর্তামি দেখা যাক। 

১৯৯৩ সালের শুরুর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ারটন থেকে স্নাতক করা ইকবাল কাদির; যিনি সে সময় একজন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার। তিনি ড. ইউনূসের কাছে কীভাবে তারবিহীন ফোন দেশের উন্নয়নে বিপ্লব ঘটাতে পারে সে চিন্তা বিস্তারিত তুলে ধরেন। তারই আইডিয়া ছিল, সেলফোন হতে পারে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বড় হাতিয়ার।

শুরুতে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা না করলেও ১৯৯৪ সালে লিখিত পরিকল্পনা পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসেন ইউনূস। কিন্তু প্রাথমিক লগ্নি করার জন্য তেমন আগ্রহ দেখাননি তিনি। তবে মার্কিন এক ধনী ব্যক্তিকে বুঝিয়ে ইকবাল কাদিরই বিনিয়োগে রাজি করিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন 'গণফোন'। সেই গণফোনের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আজকের গ্রামীণফোন। কিন্তু ইকবাল কাদির নিজের অংশের শেয়ার ড. ইউনুসের কাছে বেচে দিয়ে কোম্পানি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হন। এরপরই শুরু হয় ইউনূসের গ্রামীণফোন অধ্যায়।

নারীদের ভাগ্য পরিবর্তনের মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়ে ১৯৯৭ সাল তথা শেখ হাসিনার সরকারের আমলে গ্রামীণফোনের প্রাতিষ্ঠানিক অনুমতি নেন ড. ইউনূস। লাইসেন্স পেতে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সামনে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেন ‘অন্য সবাই ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক লাভের জন্য ব্যবসা করতে চায়’। কিন্তু গ্রামীণফোন দরিদ্র ও ভূমিহীন নারীদের জন্য। 

এছাড়া কল সেন্টারের মাধ্যমে প্রবাসীদের সঙ্গে পরিবারের কথা বলার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে নাড়া দেয়। লাইসেন্স দেয়ার বিষয়ে তিনি ড. ইউনূসকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সরকারি অনুমোদন মিলতেই গ্রামীণফোনের ৬৬ শতাংশ মালিকানা তুলে দেন বিদেশি কোম্পানি টেলিনরের হাতে। এজন্য হাজার হাজার কোটি টাকা মুনাফা হিসেবে এখনও মাশুল গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

গ্রামীণ ব্যাংকের সবচেয়ে গৌরবজনক বিনিয়োগই  ছিল এই গ্রামীণফোন। আর এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ ছিলো গ্রামীণ নারী ও উদ্যোক্তা। সেসময় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনেও আবেগি সব উপাত্তের দৃশ্যায়ন ঘটিয়েছিল তারা। কিন্তু  সেই নারীরা আজ গ্রামীণফোনের মালিক নয়।

এছাড়া লাইসেন্স নেয়ার সময় ড.  ইউনূস বলেছিলেন- গ্রামীণফোনের টাকা গরিবের ব্যাংক 'গ্রামীণ ব্যাংকে' যাবে। তবে সেই টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে যায়নি। রাষ্ট্রপ্রধানকে আবেগতাড়িত করে রেলের নেটওয়ার্কও গ্রামীণফোনে ব্যবহার করেন ড. ইউনুস। এভাবে পদে পদে গ্রামীণ নারী, উদ্যোক্তা ও দারিদ্রতাকে পুঁজি করে আবেগতাড়িত করেছেন রাষ্ট্র ও দেশের আপামর জনসাধারণকে। কিন্তু দিনশেষে নিজ স্বার্থ হাসিল করে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন ড. ইউনূস। কেননা গ্রামীণফোন গ্রামীণ মানুষের প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও তা করেননি তিনি। গ্রামীণ মানুষের কোনো কল্যাণেই আসেনি প্রতিষ্ঠানটি।

‘সামাজিক ব্যবসা’র নামেও প্রতারণা করছেন ড. ইউনূস; যার সংখ্যা প্রায় শতের কাছাকাছি। তার এমন এক কোম্পানি ফ্রান্সের ডেনোন’র সঙ্গে বাংলাদেশের শিশুদের জন্য ‘শক্তি দই’ চালু করেছিলো। কিন্তু এ খাতে শত শত টাকা এনে নিজের থলিতে ভরেন ড. ইউনূস। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক ও তার সদস্যদের নামে আসা বিভিন্ন দাতা সংস্থার অনুদানের হাজারও কোটি ডলার সরিয়ে নিয়েছে ইউনূসের মালিকানাধীন কথিত এসব কোম্পানি।

এই অর্থ ক্যালিঙ্কারি নিয়ে বহু আগেই ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশ করেছিলেন ডেনমার্কের সাংবাদিক টম হাইনম্যান। তবে এই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার পর ড. ইউনূস বলেছিলেন- গ্রামীণ ব্যাংকে করের হাত থেকে বাঁচাতেই এ কাজটি করেছিলেন’। অথচ প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি করমুক্ত। তার মানে এখানেও তিনি অসত্য বলেছিলেন।

এত কিছুর পরও ইউনূসকে ভুলের ঊর্ধ্বে ভাবছেন বাংলাদেশের অনেকে! তাকে বাঁচাতে পশ্চিমা দেশ ও কথিত বিশ্বনেতা এমনকি এ দেশের সুশীলরাও ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কেন তা বোধগম্য নয় সাধারণ মানুষের কাছে। বোধগম্য নয় দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তির আশায় দিনগোনা সেই হতভাগ্যদের কাছেও।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article


এবার পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আসবে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’

গ্রিডের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন তিন সঞ্চালন লাইন

ভোটার উপস্থিতি নয়, ভোটের পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ: ইসি রাশেদা

হিসাব ব্যবস্থায় সংস্কার প্রয়োজন: অর্থমন্ত্রী

হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা করা হচ্ছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশের জলসীমানায় এমভি আবদুল্লাহ

এবার টঙ্গী যাচ্ছে মেট্রোরেল!

আমাদের উদ্দেশ্য সড়কে মৃত্যুহার কমানো : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ডোনাল্ড লু’র আসন্ন সফরের কারণ জানালো স্টেট ডিপার্টমেন্ট

হাওর এলাকায় মাটি ভরাট করে আর কোনো রাস্তা হবে না : প্রধানমন্ত্রী

বিদায় নিচ্ছেন পিটার হাস, নতুন রাষ্ট্রদূত ডেভিড মিল কি একই ধারায় চলবেন?

তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আ.লীগের মূল লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী