বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট ব্রিটিশ সঙ্গীত শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের একটি উদ্যোগ পৃথিবীর মানুষকে নাড়া দিয়েছিল।
পাক হানাদার বাহিনীর বাংলার মানুষের উপর নিপীড়ণ আর হত্যাযজ্ঞ চালানোর খবর সবাইকে গানে গানে জানিয়েছিলেন হ্যারিসন।
প্রতিবেশি ভারতে শরণার্থী হওয়া কোটি মানুষের দুঃসহ বেদনার কথাও গানে গানেই বিশ্ববাসীকে জানান তিনি।
সেই কনসার্টের ব্যাপকতা এতটাই ছিল যে শত বছরের অন্যতম সেরা আয়োজনের তকমাও জুড়ে গেছে তার সাথে।
ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তি সেতারবাদক পণ্ডিত রবিশঙ্করের অনুরোধে হ্যারিসন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ঐতিহাসিক মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আয়োজন করেছিলেণ ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’।
গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে। কনসার্ট থেকে পাওয়া অর্থ ইউনিসেফের মাধ্যমে খরচ হয়েছিল বাংলাদেশি শরণার্থীদের জন্যে।
কনসার্টটিতে সংগীত পরিবেশন করেছিলেন নোবেল বিজয়ী বব ডিলনসহ পৃথিবী সেরা শিল্পীরা।
সেদিনের কনসার্টে হ্যারিসনের লেখা, সুর করা ও গাওয়া ‘বাংলাদেশ’ গানটি মানুষের হৃদয়ে গভীরভাবে রেখাপাত করেছিল।
পৃথিবীর ইতিহাসে ‘বাংলাদেশ’ গানটিই ছিল প্রথম কোন চ্যারিটি সঙ্গীত।
২০০৫ সালে জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান ‘বাংলাদেশ’ গানটি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘গানটির মধ্যে যে হৃদয়গ্রাহী বক্তব্য উঠে এসেছে, তা বাংলাদেশের সংকট সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে মানুষকে স্পর্শ করেছে
আজ ২৯ নভেম্বর। জগৎবিখ্যাত মহান শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী।
মহান মানুষ জর্জ হ্যারিসনকে পৃথিবীর মানুষ ধীর্ঘদিন মনে রাখবে তবে গভীর ভালোবাসায় মানুষটিকে মনে রাখবে বাংলাদেশের মানুষও।