মোহাম্মাদ এনামুল হক এনা: সাধারনত আরব দেশের নারীরা মুখ ঢেকে রাখেন। তবে আফ্রিকা মহাদেশের একটি জাতি আছে যাদের পুরুষরা বাধ্যতামূলক মুখ ঢেকে রাখেন। সেসব পুরুষদের শুধু চোখ কাপড়ের বাইরে থাকে। ২৫ বছর বয়সের পর থেকে তুয়ারেগ পুরুষ নিজের মুখ ঢেকে রাখে। রীতিমতো অনুষ্ঠান করে কৈশোর পার হওয়া তরুণকে তার কাকা-জেঠারা পূর্ণ বয়স্ক ঘোষণা দিয়ে মাথা আর মুখ ঢাকার চাদর পরিয়ে দেন।
তুয়ারেগ মানুষদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। প্রথাগত ধর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েও তারা নিজেদের আদি কিছু প্রথা জীবনের সঙ্গে জুড়ে রেখেছে। পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের সামনেও মুখের ওপর থেকে কাপড় সরানোর নিয়ম নেই তাদের। শিশুর জন্মের পর তার মাথার দুই পাশে মাটিতে দুটো ছুরি গেঁথে দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে তার সুরক্ষা আর আত্মরক্ষার প্রতীক হিসেবে। তুয়ারেগ ভাষা ওপর নিচ, বাঁ থেকে ডান বা ডান থেকে বাঁ—সবদিক থেকে লেখা যায়।
মুখ তারা ঢেকে রাখে শত্রুদের কাছে নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখতে। কথিত আছে, ৪০০ বছর ধরে তাদের মরুভুমির পথ ব্যবহারকারী বণিক দলের কাছ থেকে ডাকাতি করতো। এ রকম জীবনযাত্রা থেকেই তুয়ারেগ পুরুষদের মধ্যে নিজের মুখ ঢেকে রাখার প্রথা চালু হয় বলে মনে করা হয়। এমনিতেও মরুভূমিতে জীবন কাটানো জনগোষ্ঠী চলাফেরার সময় বালু থেকে নিজেদের রক্ষা করতে মুখ ঢেকে রাখে। কিন্তু তুয়ারেগ পুরুষদের মধ্যে মুখ ঢেকে রাখা এক কঠিন প্রথা।
তুয়ারেগ নারীদের বিয়ে করার ক্ষেত্রে তাদের ইচ্ছাই চূড়ান্ত। উদার মেজাজ, স্বাধীনচেতা, কিন্তু খুব মেজাজি হিসেবে তুয়ারেগ নারীরা বেশ পরিচিত। সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য নারীরা একা মরুভূমিতে চলে যেতে পছন্দ করেন। সমাজে তাদের কদর খুব। অনুষ্ঠানে নারীরা বাদ্যযন্ত্র বাজান। স্বামীরা পশু চরান। ঘর-গৃহস্থালিতে কী হবে, সেই সিদ্ধান্ত নারীদের হাতেই থাকে।