কাউকে কষ্ট দেওয়া ইসলামে সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ। আমাদের সমাজে অনেকে আছেন যারা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ বা জুলুম নির্যাতনের মাধ্যমে মানুষককে কষ্ট দিয়ে থাকেন। যাতে অনেকের মনও ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই মানুষকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
একদিন হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিবি আয়েশাকে (রা.) ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আয়েশা, আজকে আমি অনেক খুশি, তুমি আমার কাছে যা চাইবে তাই দেব। বলো কী চাও?’
চিন্তায় পড়ে গেলেন আয়েশা। হঠাৎ করে তিনি কী এমন চাইবেন, ভুল কিছু চাইলে যদি নবীজি কষ্ট পান? আয়েশা বললেন, ‘আমি কি কারও কাছ থেকে কিছু পরামর্শ নিতে পারি?’ নবীজি বললেন, ‘ঠিক আছে তুমি পরামর্শ নিয়েই আমার কাছে চাও।’
আয়েশা (রা.) হযরত আবু বকর (রা.)-এর কাছে পরামর্শ চাইলেন। আবু বকর (রা.) বললেন, ‘যখন কিছু চাইবেই, তাহলে তুমি মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে মিরাজের রাতে আল্লাহতায়ালার সঙ্গে হয়েছে এমন কোনো গোপন কথা জানতে চাও। আর কথা দাও, নবীজি যা বলবেন তা সর্বপ্রথম আমাকে জানাবে।’
আয়েশা (রা.) নবীজি (সা.)-এর কাছে গিয়ে মিরাজের রাতের কোনো এক গোপন কথা জানতে চাইলেন, যা এখনো কাউকে বলেননি। মুহাম্মদ (সা.) মুচকি হেসে বললেন, ‘বলে দিলে আর গোপন থাকে কী করে! একমাত্র আবু বকরই পারেন এমন বিচক্ষণ প্রশ্ন করতে।’
মুহাম্মদ (সা.) বলতে লাগলেন, ‘হে আয়েশা, আল্লাহ আমাকে মিরাজের রাতে বলেছেন, হে মুহাম্মদ (সা.) তোমার উম্মতের মধ্যে যদি কেউ, কারও ভেঙে যাওয়া মন জোড়া লাগিয়ে দেয় তাহলে আমি তাকে বিনা হিসাবে জান্নাতে পৌঁছে দেব।’
প্রতিশ্রুতি মত, আয়েশা তার বাবা হযরত আবু বকর (রা.)-এর কাছে এসে নবীজির বলে দেওয়া এই কথাগুলো বললেন।
শুনে আবু বকর (রা.) কাঁদতে লাগলেন। আয়েশা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি তো কত ভেঙে যাওয়া মন জোড়া লাগিয়েছেন, আপনার তো সোজা জান্নাতে যাওয়ার কথা। তবে কাঁদছেন কেন?’
আবু বকর (রা.) বললেন, ‘এই কথাটার উল্টো চিন্তা করে দেখো, কারও ভেঙে যাওয়া মন জোড়া লাগালে যেমন আল্লাহ সোজা জান্নাতে নেবেন, তেমনি কারও মন ভাঙলে যদি সোজা জাহান্নামে দিয়ে দেন! আমি না জানি নিজের অজান্তে কতজনের মন ভেঙেছি।’